মাসুদুর রহমান, কলকাতা
♦️Hindenburg রিপোর্ট কী?
🔺Hindenburg নামক একটি তদন্তকারী সংস্থা বিশ্বের তৃতীয় ধনীতম ব্যক্তি গৌতম আদানির ‘আদানি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ‘ বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা বা মানব নির্মিত অর্থনৈতিক দুর্যোগ বা স্টক ম্যানিপুলেশন এর অভিযোগ এনেছে।
তারা তাদের 136 পৃষ্ঠা রিপোর্টে বিস্তারিত উল্লেখ করেছে। যার জেরে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার পতন ঘটেছে 100 বিলিয়ন ডলার।
আদানি গোষ্ঠী এই রিপোর্ট মিথ্যা বলে দাবি করেছে। এরপরই Hindenburg সংস্থা 44 প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে আদানীদের দিকে এখনও পর্যন্ত একটাও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি আদানি গোষ্ঠী।
হিন্ডেনবার্গ সংস্থা কী?
🔺 এটি হল এমন একটি সংস্থা যার কাজ হল
বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি গুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাদের আর্থিক প্রতারণা বা ভুঁয়া সম্পত্তির কথা জন সম্মুখে তুলে ধরা।
অর্থাৎ মনুষ্য সৃষ্ট কৃত্রিম অর্থনৈতিক সংকটকে প্রকাশ করা।
এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কে ?
🔺নাথান আন্ডারসন নামক একজন ইজরাইলি ব্যক্তি হলেন এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। যিনি প্রথম জীবনে ট্যাক্সি চালক ছিলেন।
এরা কত জন মিলে এই কাজ করেন?
🔺 মাত্র 10 জন ব্যক্তি নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি এই অসাধ্য সাধন করে চলেছে।
Hindenburg সংস্থাটি কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
🔺এটি প্রতিষ্ঠিত হয় 2018 সালে।
ইতি পূর্বে এরা এমন কোনো রিপোর্ট পেশ করেছে কী?
🔺হ্যাঁ। ইতিপূর্বে নিকোলার মত কোম্পানিকে এদের রিপোর্টের কারণে নাজেহাল হতে হয়েছিল। নিকলা সহ মোট 36 রিপোর্ট এরা প্রকাশ করেছে। এটা 37 তম রিপোর্ট।
এদের রিপোর্টে সাফল্য কত পার্সেন্ট?
🔺এদের পূর্বের 36 টি রিপোর্টই 100% সফল।
এই কয়দিনে আদানিদের কি পরিমান ক্ষতি হল?
🔺100 বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
বর্তমানে আদানি বিশ্বের কততম ধনী?
🔺বিশ্বের তৃতীয় নম্বর থেকে গৌতম আদানি এখন 22 তম ধনী হয়েছেন। এই পতন আরো চলতে থাকবে। এর শেষ কোথায় জানা নেই।
এই রিপোর্টের কারণে ভারতীয় জন জীবন কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে?
🔺 যেহেতু ভুঁয়া সম্পত্তি দেখিয়ে আদানি গোষ্ঠী লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছে। আর ব্যাংকে সাধারণ জনগণের টাকা জমা থাকে। সেহেতু আদানি গোষ্ঠীর ক্ষতির কারণে সাধারণ মানুষেরই টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
ক্ষতি হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর তাতে সাধারণ জনগণের ক্ষতি হবে কি কারণে?
🔺আদানি গোষ্ঠী যখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে তখন তারা নথিপত্র হিসেবে বিদেশে তাদের কোম্পানি দেখিয়েছে। এবং সেই সব কোম্পানির মার্কেট ভ্যালু কাগজে কলমে গগনচুম্বী দেখিয়েছে। যার ফলে ব্যাংক তাদের ঋণ দিয়েছে। বাস্তবে সেই সব কোম্পানির মার্কেট ভ্যালু খুবই নিম্ন মানের বলে জানিয়েছে Hindenburg সংস্থা। অর্থাৎ এই আদানি গোষ্ঠী ভারতীয়দের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করেছে।
স্টক ম্যানিপুলেশন কী?
🔺স্টক ম্যানিপুলেশন হলো কম পুঁজিকে(মজুদ সম্পদ) ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অনেক বেশি করে দেখানো।
স্টক ম্যানিপুলেশন কি শাস্তি যোগ্য অপরাধ?
🔺হ্যাঁ, অবশ্যই সমগ্র দেশবাসীর সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
Hindenburg সংস্থার কর্মীরা কিভাবে এই রিপোর্ট পেশ করল?
🔺তাদের দাবি, তারা আদানিদের দেশ ও বিদেশের বহু কোম্পানিতে দীর্ঘ 2 বছর ধরে ঘুরে, কোম্পানির প্রচুর প্রাক্তন অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং কোম্পানির শত শত নথিপত্র যাচাই বাছাই করে তারপর এই রিপোর্ট পেশ করেছে।
এর প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন কিন্তু কোম্পানির নাম Hindenburg কেন?
🔺🔺1937 সালের 6-ই মে জার্মানির বিখ্যাত এয়ারলাইন্স কম্পানির এক প্যাসেঞ্জার এয়ারশিপ মারাত্মক এ্যক্সিডেন্টের সম্মুখীন হয়ে পড়ে।এই দূর্ঘটনার মাধ্যমে ঘটে যায় এয়ারশিপ যুগের পরিসমাপ্তি।।
এয়ারশিপ-টি আমেরিকার নিউ_জার্সির কাছাকাছি অবস্থিত লেকহাস্ট নোভাল এয়ারষ্টেশনে ল্যান্ডিং করার কথা ছিলো।।
কিন্তু দূর্ঘটনা বশতঃ বোষ্টনের আকাশে বিমানটিতে আগুন লাগে,এবং পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়।দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাওয়া বিমানের মধ্যে মোট 97 জন যাত্রী ছিলো।। এদের অধিকাংশ মানুষ প্রাণ হারায়।।
দূর্ঘটনার সময়ে এয়ারশিপ হতে লাফ দিয়ে বেশকিছু মানুষ নিজের প্রাণ রক্ষা করতে সক্ষম হয়। দূর্ঘটনাগ্রস্ত এয়ারশিপের নাম ছিলো -#হিন্ডেনবার্গ।
নাথান আন্ডারসন একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন – নাম দিলেন হিন্ডেনবার্গ।
Hindenburg নামকরণের সার্থকতা কোথায় ?
🔺বিভিন্ন বৃহত্তর কোম্পানির আর্থিক তছরুপের তদন্ত করে সত্যাসত্য প্রকাশ করে দেওয়া সংস্থার অন্যতম কাজ।
মাত্র 5 বছর সময়ে তারা 36 টি কম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে,, এবং,, তাদের তদন্তের পর প্রত্যেকটি কোম্পানি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ঠিক, হিন্ডেনবার্গ এয়ার-শিপের মতোই।